হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজে সংবাদ সম্মেলন
অনৈতিক কর্মকান্ড, অর্থ লোপাট’সহ অনিয়মের ফিরিস্তি ফাঁস
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে ঐতিহ্যপূর্ণ কলেজ হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ।
১৯৮৭ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে এ কলেজটি ধরাবাহিক ভালো ফলাফল করে সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। হটাৎ করে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে। সে থেকে নানা প্রশ্ন জেগে উঠে অভিভাবক মহলে।
সোমবার এ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফাতেমা আক্তার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তুলে ধরেন এ কলেজে অভ্যন্তরে থাকা নানা অনিয়ম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বর্তমান কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন যোগ দিয়েছেন ১ বছর ৫ মাস হয়েছে। তার যোগদানের কয়েক মাস পর থেকে কলেজে হিসাব বিজ্ঞানের শিক্ষক রাশেদসহ কয়েকজন শিক্ষকের সমন্বয়ে চরম অনিয়ম তৈরী করে কলেজ পরিচালনা শুরু করেন। যার কারনে কলেজের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শত ভাগ থেকে ৩০ ভাগে নেমে এসেছে। ফলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় ঘটে। যা অভিভাবক মহলে হতাশার সৃষ্টি করেছে।
অধ্যাপক ফাতেমা আক্তার, অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো: রাশেদের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেংকারি ও নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীলতা ও অনৈতিক আচরন করার অভিযোগ ও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন শিক্ষক রাশেদের বাসা কলেজের খুব কাছে হওয়ায় তার কাছে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় রেখে ক্লাস নিতে কলেজে আসেন। তার স্ত্রী চাকুরীজীবী হওয়ায় ও বাচ্চা স্কুলে গেলে বাসা খালি পেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা আড্ডার আসর গড়ে তুলে এবং ওই সুযোগে তারা বাসায় প্রাইভেট পড়ার নামে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে। অধ্যক্ষ মোশাররফ শিক্ষক রাশেদকে অতিরিক্ত প্রশ্রয় ও সুযোগ সুবিদা দিয়ে এ সকল অপকর্ম চালাচ্ছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ তুলে ধরেন।
অধ্যক্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, রাতে পুরুষ কর্মচারি থাকা সত্ত্বেও নারী কর্মচারি দিয়ে ডিউটি করান। এতে তিনি অনৈতিকতার সুযোগ কাজে লাগান। অধ্যক্ষ কলেজে আসবাব পত্র ক্রয়সহ বিভিন্ন ভাবে অর্থ লুটে নেন। তার ভয়ে কোন শিক্ষক মুখ খুলছেনা বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে পরিক্ষা চলাকালে মোবাইল ব্যবহার করে পরিক্ষা নিয়ে নকলের সুবিদা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন। কলেজে বিপুল পরিমান অর্থ থাকা সত্ত্বেও আমি’সহ আরো একজন শিক্ষকের বেতন বোনাস আটক করে রেখে আমাদের কে নানা রকম হয়রানি করছে।
এ ছাড়াও তিনি কলেজের অভ্যন্তরের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে এ প্রতিষ্ঠানে সুনাম ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সকল অনিয়ম দুর করতে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষ হতেই শিক্ষক রাশেদ শিক্ষক ফাতেমা আক্তারকে মানহানি মামলা করার হুমকি প্রদশর্ন করেন। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর তাঁর অফিস রুম খোলা থাকলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিক্ষক মো: রাশেদ জানান, আমি বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরিস্কার করবো।
উল্লেখ, অধ্যাপক ফাতেমা আক্তার পূর্বে ১ মাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়ীত্ব পালন করেছেন।