অবৈধ সম্পদ: স্ত্রী-পুত্রসহ আসামি সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান, তার স্ত্রী সৈয়দা রোকেয়া বেগম ও ছেলে মো. আসিবুর রহমানের নামে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করেছে দুদক। গত বছরের আগস্টে শাজাহান খানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রথম মামলায় মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৯টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৮৬ কোটি ৬৯ লাখ ৩২ হাজার ৭৬৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা তৎসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন শাজাহান খান ও তার স্ত্রী সৈয়দা রোকেয়া বেগম। শাজাহান খানের অবৈধ সম্পদে রোকেয়া বেগম সম্পদশালী হয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় বাবার সঙ্গে আসামি হয়েছেন ছেলে মো. আসিবুর রহমান। তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে ১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৯২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করেছে দুদক।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর (প্রেসিডিয়াম) সদস্য শাজাহান খান। তিনি ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৯ সালে নৌপরিবহন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। ২০১৩ সালের নভেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভায় তাকে নৌপরিবহন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।