ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

পপুলার বিডিনিউজ রিপোর্ট চাঁদপুর
আপডেটঃ সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪ | ৫:৫৭
পপুলার বিডিনিউজ রিপোর্ট চাঁদপুর
আপডেটঃ সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪ | ৫:৫৭
Link Copied!

হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন ওই ইউনিয়নের লোকজন।

এমন পরিস্থিতিতে অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার। এ দিকে বিদ্যালয়ের সভাপতির কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের কাছে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তারের অপসারণ চেয়ে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন ও তার শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানান।

প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা বলেন, বিধি অনুযায়ী অস্টম শ্রেনির রেজিস্ট্রেশন ফি শিক্ষার্থী প্রতি ৭৪ টাকা ও নবম শ্রেণির ১১০ টাকা। অথচ প্রধান শিক্ষক অস্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫৫০ টাকা করে আদায় করেছেন। পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের পাশাপাশি জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার প্রশংসাপত্রের জন্য ৫’শ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৬’শ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক। অথচ সরকারি বিধি অনুযায়ী ফরম পূরণের ফির সাথেই ব্যবহারিক পরীক্ষা ফি অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। তিনি কোচিং বানিজ্যের পাশাপাশি বছরে চারবার পরীক্ষা এবং ফি হিসেবে শিক্ষার্থী প্রতি ৪০০ করে ১ হাজার ৬’শ টাকা আদায় করেছেন।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকার রশিদ দেওয়া হতো না উল্লেখ করে তারা বলেন, উন্নয়ন ফি’র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ১ হাজার টাকা আদায় করতেন প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার। পরীক্ষার সময় প্রতিষ্ঠান প্রতি সেন্টার ফি ৩’শ টাকা, অথচ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩’শ টাকা আদায় করতেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বিদ্যালয়ের অর্থায়নে কেনা দুইটি কম্পিউটার নিজের বাসায় রেখে ব্যক্তিগত ব্যবহার করছেন।

তারা আরও বলেন, বিদ্যালয়ে কম্পিউটার কেনার জন্য বাবুল পাটওয়ারী নামের একজন ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেই কম্পিউটার কেনা হয়নি। স্কুল ক্যাম্পাসে মসজিদ স্থাপন/নির্মাণের নামে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একাধিকবার টাকা তুলেছেন, কিন্তু সেই মসজিদ করা হয়নি। অথচ স্কুলের মসজিদের প্রয়োজন নেই। কারণ, কলেজ ক্যাম্পাসে একটি মসজিদসহ স্কুল সংলগ্ন এলাকায় তিনটি মসজিদ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক সরকারি বেতনের বাহিরেও স্কুল থেকে বেতন বাবদ ১১ হাজার টাকা, স্কুলের ওয়াইফাই (নেট) ব্যবহার করেও তিনি প্রতিমাসে এমবি খরচের নামে ১ হাজার, ফোনের জন্য ৮’শ এবং যাতায়াত ভাতা ৬ হাজারসহ মাসে ১৮ হাজার ৮’শ টাকা নিতেন। এছাড়াও বছরে উৎসব ভাতার জন্য ১০ হাজার টাকা নিতেন। এতো অনিয়ম ও সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার পরও স্কুলের শিক্ষার্থী অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য জামাল হোসেন ও ওমর ফারুক এবং ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য নাসিম চৌধুরী ও এলাকার পক্ষে জসিম উদ্দিন জানান, ওনার (প্রধান শিক্ষক) বিরুদ্ধে যত অভিযোগ উঠেছে, সব সত্য। তিনি একক আধিপত্য বিস্তার করে এবং তাঁর মর্জিমতো ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন। বিদ্যালয়ের স্বার্থে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগের তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন এবং তাঁর অপসারনের দাবি জানাই।

এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, এই এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, মাদরাসা ও কলেজ রয়েছে। ওনি (প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার) ছাড়া ওইসব প্রতিষ্ঠানের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। ওনার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ কেন ? নিশ্চই তিনি অনিয়ম করেছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ। তাই, তদন্তকালীন সময়ে ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে এবং তাদের বক্তব্য নেওয়ার অনুরোধ জানান অভিযোগকারীরা।

এ দিকে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোৎস্না আক্তার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কিছুসংখ্যাক লোক রয়েছেন, যারা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটাচ্ছেন। এর মধ্যে একপক্ষ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে না পেরে এবং অপর পক্ষ গত ৬ আগস্ট বিদ্যালয়ের পুকুর দখলে নিতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছেন।

তিনি বলেন, যারা এসব করছেন, তারা কেউই বিদ্যালয়ের অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থী নন। বরং বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানোর প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার মানববন্ধন ও আন্দোলন করেছে এবং ইউএনও মহোদয়ের কাছে লিখিত আবেদনও দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাপস শীল বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ: বিশেষ খবর

শীর্ষ সংবাদ:
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে আমন ধানের সবুজ পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন মতলব উত্তরে পাটের ফলন কম হলেও দামে খুশি কৃষক মানুষটার শরীর দেখে বুয়েটের অবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে : সারজিস বন্যায় হাজীগঞ্জে ৫২ কোটি টাকার ক্ষতি : বেশি ক্ষতি মৎস্য খাতে সেচ্ছাসেবী সংগঠন বাতিঘর মানব কল্যাণ সংস্থার বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মায়া’সহ আ.লীগের পাঁচ নেতার শিল্প প্লট বাতিল হচ্ছে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ চাঁদপুরে ৪ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় আওয়ামীলীগের মামলা কচুয়া থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ এম. আবদুল হালিম বিচারিক ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আসছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ হাজীগঞ্জে আই বি ডব্লিউ এফ সংস্থার সভা  ভারতের বিপক্ষে চাপে থাকাটাই আমাদের জন্য সুবিধাজনক বলাখাল কলেজে ঈদে মিলাদুন্নবী সা: পালিত  ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন তামিম সৌদি ফেরত প্রবাসীদের ৫ দাবি জামিন পেলেও মুক্তি মিলছে না বিচারপতি মানিকের কখন বুঝবেন সম্পর্কে বিরতি প্রয়োজন