টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে চাঁদপুরে বেড়েছে জনদুর্ভোগ, ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে চাঁদপুরে গত বুধবার দুপুর থেকেই চাঁদপুরে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। এরপর থেকে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাত ৯টা থেকে শুক্রবার (২ আগস্ট) শুক্রবার দুপুর ১১টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ১১৩ মিলিমিটার।
শুক্রবার (২ আগস্ট) এসব তথ্য জানান চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব এসব তথ্য জানান।
টানা তিন দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে চাঁদপুর শহরের বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকার সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে ড্রেনের মধ্যে ময়লা আবর্জনা জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের নাজির পাড়া, মাদ্রাসা রোড, পালপাড়া, নিউ ট্রাক রোড, রহমতপুর আবাসিক এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে সড়কে পানি জমে আছে। বৃষ্টি কমলে পানি কিছুটা হ্রাস পায়। আবার বৃষ্টি হলে একই অবস্থা।
শুক্রবার সকালে জেলার শহরের অন্যতম আব্দুল করিম পাটোয়ারী সড়ক ও ট্রাক রোডের অবস্থা একেবারেই নাজুক। শহরের কোনো কোনো জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সড়কের বড়-বড় গর্তের ভেতর দিয়ে হেলে দুলে চলছে ছোটবড় অসংখ্য যানবাহন।
শুধু জেলা শহরেই নয় জেলার হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি সহ প্রায় সব উপজেলায়ই বেড়েছে জনদুর্ভোগ। হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের একপাশে সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। এতে তীব্র যানজট আর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকা ছোট-বড় গর্তে হতে পারে দুর্ঘটনার। বিঘœ হচ্ছে সড়ক মেরামতের কাজও।
কচুয়া উপজেলার নাছির উদ্দীন জানান, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি থেমে থেমে হয়েছে। এরপর থেকে টানা বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হওয়ারই উপায় নেই। কাজে বের হতে পারছি না। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে দুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে।
হাজীগঞ্জ উপজেলার মেহরাজ শরীফ জানান, একটি কোম্পানির মার্কেটিং এ চাকরি করি। বৃষ্টির জন্য বের হতে পারছি না। যাও কিছুক্ষণের জন্য বের হয়েছি, বৃষ্টির জন্য ঠিকমত কাজ করতে পারছি না।
বাজারের ফল বিক্রেতা আব্দুল মজিদ জানান, বৃষ্টির কারণে বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম। তাই বেচা বিক্রিয় কমেছে।
চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজারের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, আজ সকাল ১০টা থেকে ১১টার পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দোকানগুলো খুলেছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাসা থেকে বের হয়নি। বৃষ্টির কারণে দিন মজুর ও শ্রমিকদেরও কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
শহরের মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের সড়কে পানি। এখন পর্যন্ত একই অবস্থা। একটু পানি কমলেও বৃষ্টিতে আবারও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মসজিদ ও বাসা বাড়িতেও পানি উঠে গেছে। পানি গড়িয়ে নামলেও কমছে না। বর্ষা মৌসুমের কারণে আবার নদীতেও এখন পানি ভরপুর।
শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকাল বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ বাবু বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমাদের এলাকার সড়ক ডুবে যায়। তবে সকালে কিছুটা পানি কমেছে।
সদর উপজেলার রামপুর এলাকার বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব বলেন, চাঁদপুরে গেলো ১৮ ঘন্টায় ১১৩ মিলি মিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রথম দিনে হয়েছে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। আজ শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত আছে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দায়িত্বরত ট্র্যাফিক পরির্দশক (টিআই) মো. শাহ্ আলম জানান, টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ-পথের সব ধরণের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রী কম।