অপহৃত শিশু জিনিয়াকে উদ্ধারে আরাফাতের অনুসন্ধান, সিনেমায় এক কনস্টেবলের গল্প..
না। আরাফাত সাংবাদিক নন। সাংবাদিকতাও করেননি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ছাত্র। তিনি যা করেছেন তা সাধারনের ধারনার বাইরে। অপহৃত শিশু জিনিয়াকে উদ্ধারে নিজ জেলায় একজন গর্ভবতী নারী হত্যা মামলার আসামি আরেক সাহেদ লুপা তালুকদার ১ সেপ্টেম্বর টিএসসি এলাকা থেকে জিনিয়াকে অপহরণ করে। দেশবাসী লুপার অপরাধ জানছে। রিমান্ডেও স্বীকার করেছে। কিন্তু ততদিনে সপ্তাহ গড়িয়েছে।
ফুল বিক্রেতা জিনিয়াকে উদ্ধারের নপথ্যে আরাফাত কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে। পুলিশ যখন ক্লু পাচ্ছিল না তখন এই ছেলেটি সারাদিন টিএসসি ও এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সবাইকে খুজে বের করে। তাদের কাছ থেকে ওই দুই নারীর শরীরিক গড়ন তাদের পোষাকের রঙ, তাদের চলার পথসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্লু খুজে বের জানিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করে। শুধু তাই নয়, গত দুইদিন পুলিশের সঙ্গে থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করাসহ অপহরনকারীদের ছবি ও অবস্থান শনাক্ত করতেও পুলিশকে সহায়তা করে। অভিনন্দন আরাফাত।
তোমাদের মত নিপুন বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলী মেধাবীদের জন্য দেশ অপেক্ষা করছে। সমাজ চেয়ে আছে।
মনে পড়ছে রুস্তম নামে একটি সিনেমার কথা। একজন সরকারি পদস্থ আমলা তার স্ত্রীকে হত্যার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। তখন অনেক রাত। বিষয়টি গোপন রাখতেই ওই আমলা রাতের আধারে সমর্পণ করেন। কিন্তু এক কনস্টেবল চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি একটি পত্রিকার সম্পাদককে ফোন করে জানান। সম্পাদক পত্রিকার ছাপা বন্ধ রেখে ঘটনাস্থলে যান। নিজে সব শুনে রিপোর্ট করেন। পরের দিন ওই পত্রিকা হিট। ১ টাকার পত্রিকা ১০ টাকায় কোথাও ফটোকপি করে বিক্রি হয়েছে।
একটি বাস্তব ঘটনা। নায়ক আরাফাত। আরেকটি সিনেমা। কিন্তু বাস্তবতা বর্জিত নয়।
দুটি ঘটনায় দুই রকম ম্যাসেজ আমাদের সামনে আসছে। দেশে জিনয়া অপহরন বা সবিতা (ছদ্ম নাম) ধর্ষণ বা মার্ডার কিংবা অপরাধমূলক যে কোনো ঘটনার বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করে সঠিক সত্য তথ্য যে কোনো সচেতন শিক্ষিত নাগরিক বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসতে পারেন। পুলিশকে অবহিত করে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে রহস্য উদঘাটনে নায়কের ভূমিকা রাখতে পারেন। গনমাধ্যমকেও তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সমস্যা না হলে নাম প্রকাশ হতেই পারে। আরাফাত তো পেরেছে।
দ্বিতীয়ত: রুস্তম ছবির নায়ক বলবো আমি ওই কনস্টেবলকে। তার মতো তীক্ষ্ম বুদ্ধি সম্পন্ন অনেকেই আছেন আমাদের প্রশাসনে। দরকার কৌশলী হওয়া। ওই সম্পাদক কস্মিনকালেও কাউকে বলেননি যে তিনি কোন সোর্স থেকে তথ্য পেয়েছিলেন। এটাই ঠিক। সাংবাদিকরা সোর্স লিক করে না। এটা তাদের ধর্ম। তার মতো কিছু সাহসী মানুষ আছে বলেই আমরা এখনো অনেক নির্ভুল সত্য এবং অজানা বা স্কোপ নিউজ পাই।
•মিজান মালিক
১১সেপ্টম্বর ২০