একই স্থানে দুই মসজিদ, উত্তাল বদরপুর
হাজীগঞ্জ পৌরসভার বদরপুর এলাকায় একই স্থানে দুই মসজিদ নিয়ে একের পর এক ঘটছে মারামারি-হানাহানির ঘটনা। মঙ্গলবার বিকালে ওই এলাকায় তুমুল হট্টগোল হয়। হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সেলিম ও পুলিশের ফোর্স নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
ওই ঘটনায় অন্তত ৬ জন আহত হয়। ৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও একজনকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত অন্যান্যরা হলো- হাছান (৩০), আরিফ (২৬), ফরহাদ (২৮), সিরাজ (৪৫) ও এক মহিলা।
হামলাকারীরা হলো- মোস্তফা, জসিম, নুরু, স্বপন, দিদার, রনি ও বাচ্চু।
ঘটনার বিবরণীতে জানাগেছে, বদরপুর গ্রামের ১৯৬৯ সালে বদপুর জামে মসজিদ নামে একটি মসজিদ রয়েছে। ওই মসজিদ রক্ষার্থে এলাকার এক-তৃতীয়াংশ জনগণ একাট্টা। কিন্তু নতুন করে পাশাপাশি স্থানে বদরপুর গাউছুল আজম জিলানী জামে মসজিদ স্থাপন করা হয়। ওই মসজিদের মোতয়াল্লী মাওলানা আবু সুফিয়ান।
বদরপুর বাসীর ঐতিহ্যবাহী বদরপুর জামে মসজিদ যথাস্থানে রাখার দাবীতে প্রতিবাদ করে আসছে। গত মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তরা মসজিদ ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করে। ওই মসজিদের ভাংঙ্গা অংশ মেরামত করতে গেলে আজ মঙ্গলবার একটি চক্র বাঁধা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়।
আহত হাছানকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়। সে জানায়, একটা পীর কিভাবে মিথ্যা ঘটনা সাজাতে পারে। তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। আমরা ওই পীরের রোষানল থেকে বাঁচতে চাই। মসজিদ ও সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলমান। মামলার কোন সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই জোরপূর্বক আমাদের পুরোনা মসজিদ উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মসজিদের সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন কালু জানান, ওই দিন হামলার সময় মসজিদের মাইক, স্পিকার ও দেয়াল সহ প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ায় দিনদিনই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এলাকাবাসী ও পুরনো এই মসজিদটি। আমরা সুবিচার প্রার্থণা করছি। তবে এই বিষয়ে চাঁদপুর কোর্টে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং জেলা প্রশাসক বরাবরে সুষ্ঠু তদন্তের আবেদন করা হবে।
হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. আব্দুর রশিদ মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি ধর্মীয় বিধায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তবে পুরনো মসজিদ ভেঙ্গে আবু সুফিয়ান নতুন মসজিদে সবাইকে আসতে বাধ্য করতে চাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ওই দিনের ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। চলমান রেষারেষির ঘটনায় আমরা বিরক্ত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মসজিদ দু’টির নাম আলাদা হতে পারে। তবে আমাদের বিষয়টা জানা নেই।
কথিত মাওলানা আবু সুফিয়ানের ছেলে ও বদরপুর মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের পরিচালক রহমত উল্যাহ মুঠোফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।