১২ বার মৃত্যুর গুজব, কিসের শত্রুতা জানতে চাইলেন এটিএম শামসুজ্জামান
#পপুলার বিডিনিউজ ডেস্ক
প্রায় ১২ বার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের। অথচ তিনি সুস্থ আছেন। তিনি স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করছেন। বসা থেকে উঠতে পারছেন। কারও সহযোগিতা ছাড়াই চলাফেরা করছেন।
শুক্রবার রাতে তিনি বললেন, ‘মরিনি এখনো। এর আগেও ১২ বার আমার মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছে। কেন যে এ রকম করে বুঝি না। আমার সঙ্গে কিসের শক্রতা, বুঝি না। আল্লাহ এদের হেদায়েত দান করুন।’
শুক্রবার সন্ধ্যার পর হঠাৎ খবর রটে যায়, বাংলাদেশের গুণী অভিনয়শিল্পী এ টি এম শামসুজ্জামান মারা গেছেন। ফেসবুকে অনেকে তাঁর ছবি দিয়ে প্রচার করেন খবরটি । এতে এ টি এম শামসুজ্জামানের ভক্তরা মর্মাহত হন। এদিকে খবর নিয়ে জানা যায়, এ টি এম শামসুজ্জামান সুস্থ আছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর যখন রটে যায়, তখন তিনি সুত্রাপুরের বাসায় ছিলেন। নিজের মৃত্যুর খবর শোনার পর এ টি এম শামসুজ্জামান বিরক্তি আর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর হঠাৎ চারদিক থেকে ফোন আসা শুরু হয়। সবাই জানতে চাইছে, এ টি এম শামসুজ্জামান সাহেব কখন মারা গেছেন। আমরা রীতিমতো অবাক, দেশের এই দুর্যোগের সময় একটা জলজ্যান্ত মানুষকে এভাবে মেরে ফেলতে পারে!’
রুনি জামান বলেন, এটা সত্য যে মাঝে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। মাঝে নানা দফায় পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গেল বছরের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহের এক রাতে বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এ টি এম শামসুজ্জামান। সেদিনও খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সেই রাতে তাঁকে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ টি এম শামসুজ্জামানের অন্ত্রে প্যাঁচ লেগেছিল। সেখান থেকে আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে খাবার, তরল, পাকস্থলীর অ্যাসিড বা গ্যাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং অন্ত্রের ওপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কিছু শারীরিক জটিলতা হয়। টানা ৫০ দিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ১৫ জুন তাঁকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কিছুদিন সেখানে ছিলেন। গেল বছর ঈদও কেটেছে হাসপাতালের কেবিনে। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবারও কয়েকবার তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি হলে তাঁরা আবার সুত্রাপুরের নিজের বাড়ি ফিরে যান। আপাতত সেখানেই আছেন। আজও তিনি বাড়িতে সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন।
এ টি এম শামসুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক।
নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে এ টি এম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলাকোটের বড়বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্র নাথ দাস লেনে।