১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত–শিবির নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত

জুলাই ২৯, ২০২৪ | ৯:৪২ অপরাহ্ণ
পপুলার বিডিনিউজ রিপোর্ট চাঁদপুর , পপুলার বিডিনিউজ

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অন্যতম শরিক ১৪ দলের নেতাদের নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকের আলোচনায় সাম্প্রতিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় দলটির সাবেক আমির গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর রাজনৈতিক নানা পট পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হয় জামায়াত। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে দলটির কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। যা নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। ২০১৩ সালের ১ অগাস্ট হাইকোর্টের এক রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার হারায়। তবে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও রাজনীতির মাঠে তাদের সক্রিয় দেখা গেছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যে পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এর জন্য সরকার জামায়াত ও শিবিরকেই দায়ী করছে। এই সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ১৫০ আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৬৬ জন। সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দেয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।