কোটা আন্দোলন: সারাদেশে নিহত ১০, আহত পাঁচশতাধিক

জুলাই ১৮, ২০২৪ | ৮:০৫ অপরাহ্ণ
পপুলার বিডিনিউজ ডেস্ক চাঁদপুর , পপুলার বিডিনিউজ

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংসতায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে,২৫ জেলায় ৯৯ পুলিশ, ৩০ সংবাদকর্মীসহ আহত হয়েছেন ৫৫৭ জন। আন্দোলন সংঘর্ষে রাজধানীতে ৫ জন, সাভার, মাদারীপুর, নরসিংদীতে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরায় কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মরদেহ উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রাখা আছে বলে নিশ্চিত করেছে হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা জানান, আন্দোলনকারীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে অংশ নিতে উত্তরার আজমপুর এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশে সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে চারজন নিহত হন। তবে, নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। তার নাম ফারহান ফাইয়াজ। সে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অজ্ঞাতনামা এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে।  এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সহিংসতায় ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দিনভর সংঘর্ষে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধসহ রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মোট ৩৩ জনকে ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাংবাদিক, পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ ১৬ জন ছড়্ড়া গুলিতে আহত হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডের চিকিৎসা চলছে। আহতদের বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। কমপ্লিট শাট ডাউনের মধ্যে সাভারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়। এছাড়া এই সংঘর্ষে ইয়ামীন নামে এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে বলে জানা গেছে। মাদারীপুরে দিনব্যাপী কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়ির সামনের কাঁচ ভেঙ্গে ফেলেছে। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, ডিসি অফিস ও লঞ্চঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে ৬ জনকে। এদিকে, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শকুনী লেকে পড়ে আন্দোলনকারী দিপ্ত দে (১৯) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নরসিংদীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ ও বিজিবির সংঘর্ষে তাহমিদ ভুইয়া (১৫) নামে এক শিক্ষার্থী ও ইমন নামের অপর আরেকজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভেলানগর-জেলখানা মোড় এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। নিহত তাহমিদ ভুইয়া নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর নন্দীপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে ও এনকেএম হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ইমন পলাশ উপজেলার দড়িপাড়া এলাকার কাইয়ুম মিয়ার ছেলে। তাহমিদ ভূঁইয়া এনকেএম হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আহতদের নরসিংদী জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চলমান কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় সারা দেশে গত কয়দিনে মোট ১৬ জনের মৃত্যু হলো। সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট নিউজ পোর্টাল