ফুটবলের উন্নয়নে নজর দিন

ডিসেম্বর ১২, ২০২২ | ৫:৩১ অপরাহ্ণ
সফিউল আযম , পপুলার বিডিনিউজ

এ দেশের মানুষের বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রতি যে উৎসাহ দেখা যায়, তা এককথায় বিরল। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দল নেই, কিন্তু আছে প্রিয় দল, প্রিয় তারকার প্রতি সমর্থন। ফুটবল সম্পর্কে যাদের বিন্দুমাত্রও ধারণা নেই, তারাও এতে অংশ নেন। এটা ফুটবলের প্রতি দেশের সব শ্রেণির মানুষের ভালোবাসারই প্রকাশ। সারা দেশের মানুষ যখন ফুটবলের উৎসবে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে, তখন আমাদের ফুটবলের অবস্থান কোথায়, এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই আসে। দেশের মানুষের ফুটবলের প্রতি এত দরদ ও উন্মাদনা থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব ফুটবলে আমরা কেন তলানিতে? বাংলাদেশের ফুটবলে সাংগঠনিক দক্ষতার অভাব রয়েছে। রয়েছে উদ্যোক্তা ও উদ্যোগেরও অভাব। এটাও ঠিক যে, আর্থিক সমস্যা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে, যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বেশ কয়েকটি ক্লাব জড়িয়ে পড়েছিল ক্যাসিনো-কাণ্ডে। সরকার বেশ শক্ত হাতে সে অনৈতিক কর্মকাণ্ড দমন করেছে। আবার অনেকে ক্লাবের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটার মাধ্যম হিসাবে এই ক্লাবগুলোকে ব্যবহার করত। ফলে ক্রীড়া ক্লাবগুলো পড়ে বেশ সংকটে। দল গঠনেও হিমশিম খায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সরকারি প্রণোদনা। দেশের ফুটবলের উন্নয়নে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে দায়িত্ব নিতে হবে। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত মাঠ নেই অনুশীলনের, ঢাকার আশপাশ এলাকায় মাঠের ব্যবস্থা রাখা উচিত। ক্লাবগুলোকে প্রয়োজনে ঢাকার আশপাশে স্থানান্তর করা যেতে পারে, যাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা খেলোয়াড় তৈরিতে অবদান রাখতে পারে। সর্বোপরি ক্লাবগুলোকে পেশাদার মনোভাব পোষণ করতে হবে। শুধু সরকারের ওপর তাকিয়ে থাকলে হবে না, নিজেদেরও পরিকল্পনা থাকতে হবে। সবসময় যে নিজস্ব মাঠ থাকতে হবে তা নয়, প্রয়োজনে অন্য ক্লাবের মাঠ লিজ নেওয়া যেতে পারে। মাঠের পরিচর্যা করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে ফুটবল ফেড়ারেশনকে ভূমিকা রাখতে হবে। ফুটবল মাঠে দর্শক ফেরানোর জন্য নিতে হবে উদ্যোগ। স্পন্সর জোগাড় করতে হবে। সম্প্রতি আমরা দেখেছি, দেশের মেয়েরা, বিশেষ করে মোট জনসংখ্যায় ২ শতাংশ হয়েও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়েরা ফুটবলে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে। অবদান রাখছে মহিলা ফুটবলে। তাদের আরও প্রণোদনা ও উৎসাহ দিতে হবে। তাদের জীবন ও জীবিকায়নে সহায়তা করতে হবে। তাহলে শুধু মেয়েরা কেন, ছেলেরাও এগিয়ে আসবে। বাংলাদেশের মানুষের অস্থিমজ্জায় মিশে আছে ফুটবল। ফুটবলের দর্শক আগে ছিল, এখনো আছে, সবসময় থাকবে। প্রয়োজন সঠিক ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনা। তাহলেই এগিয়ে যাবে দেশের ফুটবল।